পূর্ণিমার রাতের প্রেম

(author),
80 TK 60 TK
- Pages
  • Save 20 Tk.

Description
সমাজে যারা উঁচুতলার মানুষ তাদের ধ্যানধারণা সবসময় থাকে তাদের অধীনে যারা থাকবে তারা শুধু যেন তাদের হুকুম তামিল করার জন্যই থাকে, জবাব দিতে যেন না পারে। করাচীর যুবক চন্দ্র। জন্মগত বোবা। কিন্তু কানে শুনতে পায়। যার বাবা- মা কেউ নেই। থাকে সিদু মিষ্টিওয়ালার কাছে যিনি চন্দ্রকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে ঠাই দিয়েছিল তার কাছে। মিষ্টির দোকানের যাবতীয় কাজ তাকে করতে হত। বিনিময়ে মালিকের কাছে কখনো জুটত তিরষ্কার আর মারধর। তার যাওয়ার কোন জায়গা ছিল না বলে তাকে করা তিরষ্কার ও গালাগালি তার রুটির টুকরোর সাথে হজম হয়ে যেত। মালিক তাকে ব্যস্ত রাস্তায় চটপটি বিক্রি করার জন্য ঠেলাগাড়ি কিনে তাকে চটপটি বিক্রি করার কাজে লাগিয়ে দেয়। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে চন্দ্রের নিসঙ্গ জীবনে আসে পারু। কানে রূপার দুল, পায়ে মল পরে বান্ধবীদের নিয়ে সদলবলে চন্দ্রের দোকানে আসত পারু প্রায় প্রতিদিনই। এসেই চন্দ্রকে ক্ষেপাত। দোকানের জিনিস এটা সেটা ফেলে দিত। এভাবে চন্দ্রের বোবা মনে পারুর জন্য একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়। লেখক লিখেছেন, " পারু তার বান্ধবীদের সাথে যখন কদম মিলিয়ে চলে যায় তখন সে পারুর মলের শব্দ আলাদা করে শুনতে পায়। তার বান্ধবীরাও পায়ে মল পরে। তবে পারুর পায়ের মলের শব্দ সঙ্গীতের সুরের ন্যায় তার কানে নয় বরং হ্রদয়ের অতল গহবরে পর্যন্ত ধ্বনিত হয়। এতেই সে খুশী, এর বেশী সে চায় না। " হঠাৎ একই রাস্তায় একদিন নতুন চটপটিওয়ালার আর্বিভাব হলে পারু চন্দ্রকে ইচ্ছা করে ক্ষেপানোর জন্য বান্ধবীদের নিয়ে সেই নতুন চটপটিওয়ালার দোকানে যায় আর ইচ্ছা করে চন্দ্রকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। চন্দ্র রাগের চোটে নতুন চটপটিওয়ালার গাড়ি ভেঙে দেয়, তাকে মারধর করে। এই অপরাধে তার ৬ মাসের জেল হয়। জেল খেটে বেরিয়ে এলে সিদু তাকে আবার গাড়ি দিয়ে চটপটি বিক্রি করতে পাঠায়। সে পারুর জন্য অপেক্ষা করে। যখন দেখে পারু আসছে আর এসে তার সামনে দাঁড়ায় তখন তার দুইচোখে অশ্রু নামে। লেখকের ভাষায়, " আজ পারু যেন বোবা আর চন্দ্র কথা বলছে। কথা বলছে চন্দ্রের অশ্রু। আর পারু বা কিভাবে বুঝাবে তাকে যে, সে বিগত ৬ মাস যাবৎ তার এই অশ্রুর জন্য অপেক্ষায় ছিল। " গল্পটা পড়তে গিয়ে বস্তুতই গলা দিয়ে একটা মন খারাপের কান্না উঠে আসছিল। কত সরল হয় একজন মানুষের ভালোবাসা। হোক সে বোবা। তবুও এত অত্যাচার সহ্য করার পরেও তার প্রেমিক হ্রদয় মরে যায় নি। এতক্ষণ যে লেখকের গল্প নিয়ে আলোচনা করছিলাম তিনি আর কেউ নন উর্দু সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী কৃষণ চন্দর। যার কলমের গুণে ' বোবার ভালোবাসা' গল্পে ফুটে উঠেছে সমাজের নিচু তলার প্রতি উঁচু তলার মানুষের মনোভাবের আড়ালে এক বোবার রোমান্টিক মন। ' জামগাছ' গল্পে লেখক আমলাতন্ত্রের লালফিতার কারণে কি সমস্যার সৃষ্টি হয়, তা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আবার সরকারী প্রকল্পের নামে যে দুনীর্তি ও অর্থের অপচয় ঘটে তারই চিত্র এঁকেছেন ' কুকুরের পরিবার পরিকল্পনা ' গল্পে ' পেশোয়ার এক্সপ্রেস' গল্পে অপূর্ব দক্ষতার সাথে তিনি ভারত বিভাগের করুণ চিত্র এঁকেছেন, যেখানে শত শত মানুষ প্রাণ দিয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়। 'পূর্ণিমার রাতের প্রেম' যার নামে গল্পগ্রন্থটির নামকরণ পড়তে গিয়ে এক ছোট ভুলের কারণে দুই নর- নারীর মিলন বিরহ হ্রদয়ে হাহাকারের বাণ ডেকেছিল। ' মিস নৈনিতাল ' গল্পে লেখক অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সাথে তুলে ধরেছেন, বড়লোকের মেয়ের আহত কুকুরের কাছে হাসপাতালে বাঘের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত যুবকের জীবন মূল্যহীন। by: Prossonno Roy

Publisher: আহমদ পাবলিশিং হাউজ
ISBN:
Number of pages: -


REVIEWS
সমাজে যারা উঁচুতলার মানুষ তাদের ধ্যানধারণা সবসময় থাকে তাদের অধীনে যারা থাকবে তারা শুধু যেন তাদের হুকুম তামিল করার জন্যই থাকে, জবাব দিতে যেন না পারে। করাচীর যুবক চন্দ্র। জন্মগত বোবা। কিন্তু কানে শুনতে পায়। যার বাবা- মা কেউ নেই। থাকে সিদু মিষ্টিওয়ালার কাছে যিনি চন্দ্রকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে ঠাই দিয়েছিল তার কাছে। মিষ্টির দোকানের যাবতীয় কাজ তাকে করতে হত। বিনিময়ে মালিকের কাছে কখনো জুটত তিরষ্কার আর মারধর। তার যাওয়ার কোন জায়গা ছিল না বলে তাকে করা তিরষ্কার ও গালাগালি তার রুটির টুকরোর সাথে হজম হয়ে যেত। মালিক তাকে ব্যস্ত রাস্তায় চটপটি বিক্রি করার জন্য ঠেলাগাড়ি কিনে তাকে চটপটি বিক্রি করার কাজে লাগিয়ে দেয়। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে চন্দ্রের নিসঙ্গ জীবনে আসে পারু। কানে রূপার দুল, পায়ে মল পরে বান্ধবীদের নিয়ে সদলবলে চন্দ্রের দোকানে আসত পারু প্রায় প্রতিদিনই। এসেই চন্দ্রকে ক্ষেপাত। দোকানের জিনিস এটা সেটা ফেলে দিত। এভাবে চন্দ্রের বোবা মনে পারুর জন্য একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়। লেখক লিখেছেন, " পারু তার বান্ধবীদের সাথে যখন কদম মিলিয়ে চলে যায় তখন সে পারুর মলের শব্দ আলাদা করে শুনতে পায়। তার বান্ধবীরাও পায়ে মল পরে। তবে পারুর পায়ের মলের শব্দ সঙ্গীতের সুরের ন্যায় তার কানে নয় বরং হ্রদয়ের অতল গহবরে পর্যন্ত ধ্বনিত হয়। এতেই সে খুশী, এর বেশী সে চায় না। " হঠাৎ একই রাস্তায় একদিন নতুন চটপটিওয়ালার আর্বিভাব হলে পারু চন্দ্রকে ইচ্ছা করে ক্ষেপানোর জন্য বান্ধবীদের নিয়ে সেই নতুন চটপটিওয়ালার দোকানে যায় আর ইচ্ছা করে চন্দ্রকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। চন্দ্র রাগের চোটে নতুন চটপটিওয়ালার গাড়ি ভেঙে দেয়, তাকে মারধর করে। এই অপরাধে তার ৬ মাসের জেল হয়। জেল খেটে বেরিয়ে এলে সিদু তাকে আবার গাড়ি দিয়ে চটপটি বিক্রি করতে পাঠায়। সে পারুর জন্য অপেক্ষা করে। যখন দেখে পারু আসছে আর এসে তার সামনে দাঁড়ায় তখন তার দুইচোখে অশ্রু নামে। লেখকের ভাষায়, " আজ পারু যেন বোবা আর চন্দ্র কথা বলছে। কথা বলছে চন্দ্রের অশ্রু। আর পারু বা কিভাবে বুঝাবে তাকে যে, সে বিগত ৬ মাস যাবৎ তার এই অশ্রুর জন্য অপেক্ষায় ছিল। " গল্পটা পড়তে গিয়ে বস্তুতই গলা দিয়ে একটা মন খারাপের কান্না উঠে আসছিল। কত সরল হয় একজন মানুষের ভালোবাসা। হোক সে বোবা। তবুও এত অত্যাচার সহ্য করার পরেও তার প্রেমিক হ্রদয় মরে যায় নি। এতক্ষণ যে লেখকের গল্প নিয়ে আলোচনা করছিলাম তিনি আর কেউ নন উর্দু সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী কৃষণ চন্দর। যার কলমের গুণে ' বোবার ভালোবাসা' গল্পে ফুটে উঠেছে সমাজের নিচু তলার প্রতি উঁচু তলার মানুষের মনোভাবের আড়ালে এক বোবার রোমান্টিক মন। ' জামগাছ' গল্পে লেখক আমলাতন্ত্রের লালফিতার কারণে কি সমস্যার সৃষ্টি হয়, তা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আবার সরকারী প্রকল্পের নামে যে দুনীর্তি ও অর্থের অপচয় ঘটে তারই চিত্র এঁকেছেন ' কুকুরের পরিবার পরিকল্পনা ' গল্পে ' পেশোয়ার এক্সপ্রেস' গল্পে অপূর্ব দক্ষতার সাথে তিনি ভারত বিভাগের করুণ চিত্র এঁকেছেন, যেখানে শত শত মানুষ প্রাণ দিয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়। 'পূর্ণিমার রাতের প্রেম' যার নামে গল্পগ্রন্থটির নামকরণ পড়তে গিয়ে এক ছোট ভুলের কারণে দুই নর- নারীর মিলন বিরহ হ্রদয়ে হাহাকারের বাণ ডেকেছিল। ' মিস নৈনিতাল ' গল্পে লেখক অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সাথে তুলে ধরেছেন, বড়লোকের মেয়ের আহত কুকুরের কাছে হাসপাতালে বাঘের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত যুবকের জীবন মূল্যহীন। by: Prossonno Roy
সমাজে যারা উঁচুতলার মানুষ তাদের ধ্যানধারণা সবসময় থাকে তাদের অধীনে যারা থাকবে তারা শুধু যেন তাদের হুকুম তামিল করার জন্যই থাকে, জবাব দিতে যেন না পারে। করাচীর যুবক চন্দ্র। জন্মগত বোবা। কিন্তু কানে শুনতে পায়। যার বাবা- মা কেউ নেই। থাকে সিদু মিষ্টিওয়ালার কাছে যিনি চন্দ্রকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে এনে ঠাই দিয়েছিল তার কাছে। মিষ্টির দোকানের যাবতীয় কাজ তাকে করতে হত। বিনিময়ে মালিকের কাছে কখনো জুটত তিরষ্কার আর মারধর। তার যাওয়ার কোন জায়গা ছিল না বলে তাকে করা তিরষ্কার ও গালাগালি তার রুটির টুকরোর সাথে হজম হয়ে যেত। মালিক তাকে ব্যস্ত রাস্তায় চটপটি বিক্রি করার জন্য ঠেলাগাড়ি কিনে তাকে চটপটি বিক্রি করার কাজে লাগিয়ে দেয়। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবনে চন্দ্রের নিসঙ্গ জীবনে আসে পারু। কানে রূপার দুল, পায়ে মল পরে বান্ধবীদের নিয়ে সদলবলে চন্দ্রের দোকানে আসত পারু প্রায় প্রতিদিনই। এসেই চন্দ্রকে ক্ষেপাত। দোকানের জিনিস এটা সেটা ফেলে দিত। এভাবে চন্দ্রের বোবা মনে পারুর জন্য একটা জায়গা তৈরি হয়ে যায়। লেখক লিখেছেন, " পারু তার বান্ধবীদের সাথে যখন কদম মিলিয়ে চলে যায় তখন সে পারুর মলের শব্দ আলাদা করে শুনতে পায়। তার বান্ধবীরাও পায়ে মল পরে। তবে পারুর পায়ের মলের শব্দ সঙ্গীতের সুরের ন্যায় তার কানে নয় বরং হ্রদয়ের অতল গহবরে পর্যন্ত ধ্বনিত হয়। এতেই সে খুশী, এর বেশী সে চায় না। " হঠাৎ একই রাস্তায় একদিন নতুন চটপটিওয়ালার আর্বিভাব হলে পারু চন্দ্রকে ইচ্ছা করে ক্ষেপানোর জন্য বান্ধবীদের নিয়ে সেই নতুন চটপটিওয়ালার দোকানে যায় আর ইচ্ছা করে চন্দ্রকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। চন্দ্র রাগের চোটে নতুন চটপটিওয়ালার গাড়ি ভেঙে দেয়, তাকে মারধর করে। এই অপরাধে তার ৬ মাসের জেল হয়। জেল খেটে বেরিয়ে এলে সিদু তাকে আবার গাড়ি দিয়ে চটপটি বিক্রি করতে পাঠায়। সে পারুর জন্য অপেক্ষা করে। যখন দেখে পারু আসছে আর এসে তার সামনে দাঁড়ায় তখন তার দুইচোখে অশ্রু নামে। লেখকের ভাষায়, " আজ পারু যেন বোবা আর চন্দ্র কথা বলছে। কথা বলছে চন্দ্রের অশ্রু। আর পারু বা কিভাবে বুঝাবে তাকে যে, সে বিগত ৬ মাস যাবৎ তার এই অশ্রুর জন্য অপেক্ষায় ছিল। " গল্পটা পড়তে গিয়ে বস্তুতই গলা দিয়ে একটা মন খারাপের কান্না উঠে আসছিল। কত সরল হয় একজন মানুষের ভালোবাসা। হোক সে বোবা। তবুও এত অত্যাচার সহ্য করার পরেও তার প্রেমিক হ্রদয় মরে যায় নি। এতক্ষণ যে লেখকের গল্প নিয়ে আলোচনা করছিলাম তিনি আর কেউ নন উর্দু সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী কৃষণ চন্দর। যার কলমের গুণে ' বোবার ভালোবাসা' গল্পে ফুটে উঠেছে সমাজের নিচু তলার প্রতি উঁচু তলার মানুষের মনোভাবের আড়ালে এক বোবার রোমান্টিক মন। ' জামগাছ' গল্পে লেখক আমলাতন্ত্রের লালফিতার কারণে কি সমস্যার সৃষ্টি হয়, তা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আবার সরকারী প্রকল্পের নামে যে দুনীর্তি ও অর্থের অপচয় ঘটে তারই চিত্র এঁকেছেন ' কুকুরের পরিবার পরিকল্পনা ' গল্পে ' পেশোয়ার এক্সপ্রেস' গল্পে অপূর্ব দক্ষতার সাথে তিনি ভারত বিভাগের করুণ চিত্র এঁকেছেন, যেখানে শত শত মানুষ প্রাণ দিয়েছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায়। 'পূর্ণিমার রাতের প্রেম' যার নামে গল্পগ্রন্থটির নামকরণ পড়তে গিয়ে এক ছোট ভুলের কারণে দুই নর- নারীর মিলন বিরহ হ্রদয়ে হাহাকারের বাণ ডেকেছিল। ' মিস নৈনিতাল ' গল্পে লেখক অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সাথে তুলে ধরেছেন, বড়লোকের মেয়ের আহত কুকুরের কাছে হাসপাতালে বাঘের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত যুবকের জীবন মূল্যহীন। by: Prossonno Roy

Publisher: আহমদ পাবলিশিং হাউজ
Category: অনুবাদ
ISBN:
Number of pages: -

Related Products