একটা সুন্দর শাদা দোতলা বাড়ি। অনেকখানিক জায়গা জুড়ে সেই চমৎকার দোতলা বাড়িটি যখন বাগানবিলাসের লাল পাতায় ছেয়ে যায় তখন বাড়িটিকে আরো বেশি চমৎকার দেখায়, স্বপ্নের বাড়ি বলে মনে হয়।কাউকে বাড়ির ঠিকানা দেওয়ার সময়েও রঞ্জুর একটু 'চমৎকার বিশেষণ লাগিয়ে' বাড়তি অঙ্গভঙ্গিমায় দেখিয়ে বলে ওই যে 'রাস্তার ডান দিকে মোড় নিলেই চমৎকার শাদা বাড়ি। বাগানবিলাসে ছাওয়া '।
এতক্ষন যে বাড়িটির এতো আলোচনা করছিলাম, রঞ্জুরা আদৌ সেই বাড়ির মালিক নয়, কেয়ারটেকার।এই বাড়ির আসল মালিক রঞ্জুর বাবার বন্ধু মইনুদ্দিন চাচা।তিনি বিদেশে চলে যাওয়ার আগে এই বাড়িটা দেখাশোনার দায়িত্ব রঞ্জুর বাবার উপর দিয়ে গেছেন। রঞ্জুরা তাই এখন নিজের বাড়ির মতোই গুছিয়ে অনেক বছর ধরে এই বাড়িতেই থেকে গেছে।
সবকিছুই ঠিক চলছিল, কিন্তু হঠাৎ একদিন মইনুদ্দিন চাচার চিঠি এলো। তিনি নাকি দেশে ফিরবেন।মাথায় বাজে পড়বার মতোই অবস্থা। তাহলে কি এইবার বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে? কোথায় এক আশংকা এসে ভিড় করলো রঞ্জুর বাবার মাথায়।এতদিন মাইনুদ্দিনের পাঠানো টাকায় কিচ্ছুই ঠিক করেননি এই বাড়ির, না করেছেন মেরামত, না করেছেন পাকা আরো দুটো ঘর।টাকাগুলো না জমিয়ে নিজের ব্যবসার কাজে খাটিয়েও লসের মুখ দেখেছেন।এখন কি হবে? লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে ভেতরে ভেতরে।
এতো চিন্তা আর শঙ্কার মধ্যেও হঠাৎ মইনুদ্দিন চাচার মেয়ে তানিয়ার একটা চিঠি এলো।মইনুদ্দিন চাচা আর বেঁচে নেই আর শাদা বাড়িটা তিনি লিখে দিয়ে গেছেন ছোটবেলার বন্ধুর নামে।চরম হতাশার মধ্যেও স্বস্তির সংবাদ হলেও বাড়ির কেউই শান্তিতে নেই।যতটা আনন্দ হওয়ার কথা শাদা বাড়ির পেছনের অতীতটা তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্নে কোনো ভাটা এনে দেবে না তো?
by: Ruponti Shahrin
Publisher:
সময় প্রকাশন
Category:
উপন্যাস
ISBN: 9844581079
Number of pages: 48