স্মৃতিকথা ও এক পথিকের অনুভূতি

স্মৃতিকথা ও এক পথিকের অনুভূতি বইটি লেখকের এক অনন্য স্মৃতি । ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত লেখাগুলাে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল এবং কিছু অপ্রকাশিত সেগুলাে বিগত ২০০৭ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে এগার বছরে একত্রিত করে জ্ঞান চর্চা ও গবেষণা থেকে লেখা । তাছাড়া ব্যক্তিগত , পারিবারিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , সাহিত্য , ইতিহাস , ধর্মীয় , ভাষা , সাক্ষাত্তার , আলােচনা , সংবাদপত্র নিবন্ধগুলাে বিভিন্ন পত্র - পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে । সেই বক্তব্যগুলাে স্মৃতিকথার বইয়ে স্থান পেয়েছে । পেয়েছে তার বাবার স্মৃতিচারণ সম্পর্কে বিভিন্ন সুধীজনের কথা । আরাে রয়েছে পূর্ব পুরুষের কথা । শৈশবের শিক্ষা জীবন , বেড়ে ওঠা , বই পড়া , লেখালেখির কথা , কিছু পুনমুদ্রণ থেকে নেওয়া । তিনি স্মৃতিকথা এতদিন হৃদয়ের বাক্সবন্দি করে রেখেছিলেন । বই লেখালেখি পরিপূর্ণ আত্মজীবনী না হলেও সেই কথাগুলাে লেখকের বিবেক থেকে স্মৃতিকথায় এসেছে । যা আত্মজীবনী ও জীবনস্মৃতি থেকে আলাদা কিছু নয় । তিনি ভূমিকাতে লেখেছেন কাছে থেকে যা দেখেছেন , জেনেছেন , বুঝেছেন , সেই সব স্মৃতি তিনি বইতে লিপিবদ্ধ করেছেন । লিখেছেন ভাষা আন্দোলন , মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি , বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ নিয়ে । বইটিতে ১০১টি প্রবন্ধ - নিবন্ধ রয়েছে সত্যিই অনবদ্য রচনা লিখেছেন কিছু নিয়ে । বহাটতে ১০১টি বিখ্যাত মানুষ নিয়ে । এই সব ব্যক্তি দেশের ও সমাজের বিভিন্ন অঙ্গনে সুখ্যাতি রয়েছে এবং নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের দাবীদার । লেখক দীর্ঘ ৩৭ বছর দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেছেন নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে । তিনি অভিজ্ঞতা অর্জনের কথাও বলেছেন । দেশ - বিদেশের ভ্রমণের কথাও বলেছেন । লেখক স্বীকার করেছেন তিনি কোনাে পেশাদার লেখক নন । তবে গ্রন্থপ্রেমিক এবং ইতিবাচক মানুষ । মূলতঃ গভীর চিন্তা থেকেই বইটি প্রকাশ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন । অনেক মনীষী আত্মজীবনী লিখে যেতে পেরেছেন অনেকের সেই সৌভাগ্য হয়নি । সেটি তিনি উপলব্ধি করেছেন তার অন্তর্দষ্টি দিয়ে । তিনি বলেছেন অনেক স্মৃতি বিস্মৃতি হয়ে যাচ্ছে । তাই এগুলাে একসঙ্গে করে স্মৃতিকথায় প্রকাশিত হলে তার অনুভূতির কথা মানুষ জানতে পারবেন । বইটিতে বেশ কিছু আলােকচিত্র স্থান পেয়েছে , যা বইকে আরাে সমৃদ্ধশালী করবে । বইটিতে যেমন একশ বছর পূর্বের কথা রয়েছে তেমনি আড়াই দশকের বেশি পারিবারিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , ধর্মীয় , ইতিহাস , ভাষা , আন্দোলন , মুক্তিযুদ্ধের কথা , বাবার স্মৃতিচারণ , জন্মস্থানের কথা , পাঠাগার , বই পড়া ও লেখালেখি নিয়ে কথা । রয়েছে । বইটির ভাষা , বর্ণনা , তথ্য , যুক্তি উপস্থাপন , শৈলী , মূল্যায়ন সুখপাঠ্য । বইটিতে আর্থ - সামাজিক প্রেক্ষাপটে লেখক প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করে উদারতার পরিচয় দিয়েছেন এবং একত্রে মলাটবন্দি করে প্রবন্ধ - নিবন্ধগুলাে চিন্তাশীল পাঠকের কাছে পৌছানাের চেষ্টা করেছেন । লেখক অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী সেটিও স্পষ্ট করে বলেছেন । সেই হিসেবে বইটি পাঠকপ্রিয়তা পাবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ।