অর্থনীতির বিষয় আশয়

আশির দশক থেকে শুরু করে অদ্যাবধি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহতভাবে ত্বরান্বিত হয়েছে । এর ফলে বিশ্বব্যাংকের নিম্ন - মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। এই অর্জনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সহায়ক নীতি এবং ব্যক্তিখাতের উদীয়মান, সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের অবদান। এতদসত্ত্বেও আমাদের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরােপুরি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশকিছু সমস্যা আছে। মামুন রশীদের অর্থনীতির বিষয় আশয় ’ গ্রন্থে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সমস্যার বিশদ আলােচনা করা হয়েছে। শুধু সমস্যা চিহ্নিতকরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে উত্তরণের দিক নির্দেশনাগুলাে বিশেষভাবে প্রণিধানযােগ্য । প্রবৃদ্ধি তুরান্বিত করণের একটি মূল নির্ণায়ক হলাে বিনিয়ােগ । বাংলাদেশের পুঁজিবাজার এখন পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। অতএব, বিনিয়ােগের অর্থায়নে ব্যাংকিং খাতের সক্রিয় ভূমিকা অত্যাবশ্যক। বর্তমানে ব্যাংকিং খাত বেশকিছু সমস্যায় জর্জরিত। বিশেষ করে খেলাপিঋণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌছেছে। প্রত্যাশিতভাবেই বেশ কয়েকটি প্রবন্ধে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে আলােচ্য বইয়ে । অর্থনীতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয় । নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন ছাড়াও অনেক খাতে সরকারি বিনিয়ােগের প্রয়ােজন সর্বজন স্বীকৃত । সরকার কর্তৃক বস্তুনিষ্ঠ বাজেট প্রণয়ন ও গুণগতমান বজায় রেখে যথাসময়ে তা বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক । কয়েকটি প্রবন্ধে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে । উল্লেখযােগ্য বিষয়ের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে মুদ্রানীতি, কর্মসংস্থান, বিশ্বমানের পেশাজীবি সৃষ্টি, প্রযুক্তির উন্নয়ন , দুর্নীতি দমন এবং আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার । মামুন রশীদ একজন প্রতিভাবান বিশ্লেষক। অর্থনীতির কঠিন বিষয় সহজভাবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে তার পারদর্শিতা ঈর্ষণীয়। বইটি পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করবে, এটাই আমার প্রত্যাশা । মির্জা আজিজুল ইসলাম সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অধ্যাপক , ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়