যে হৃদয় শরনার্থী চিরকাল

আশির দশকের অন্যতম কবি গাউসুর রহমান প্রেমের কবিতায় সহজিয়া উচ্চারণের সাধক নন । প্রেমের আনন্দ তাঁর কবিতায় যেমন কাক্ষিত , তেমনি তাঁর কবিতার শব্দে শব্দে বেজে ওঠে অতৃপ্ত কামনার শিরার সংক্ষোভে । তাঁর । দেহ মনের সন্নিধিতে প্রেমিকার অনুপস্থিতি যে বেদনা সঞ্চার করে , তা চরাচরব্যাপী ছড়িয়ে যায় কবিতায় । তাঁর কবিতায় প্রেম মিলনের চেয়ে বিচ্ছেদ চেতনার রােমান্টিক বিলাসিতা বেশি লক্ষ্য করা যায় । আত্মগত ও স্বজগৎ নির্বাসিত এক ধরনের প্রেরণা তাঁর কবিতাকে শক্তি জুগিয়েছে । অনিকেত বেদনার এক ধরনের দীর্ঘ আলপিন তাঁর বুককে করেছে রক্তাক্ত জখম । তাঁর কবিতায় গভীর জীবনবােধে আলােড়িত হয়ে দার্শনিক দৃষ্টির প্রক্ষেপণও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে । ফলে তাঁর কবিতা পাঠকের চেতনার ভেতর প্রদেশকেও আলােকিত করে । আর তাই তাঁর কবিতায় জীবন জিজ্ঞাসা গভীর । মুক্তিযুদ্ধের দীপিত সময়কে কেন্দ্র করে বাঙালির মুক্তির আকাক্ষা এবং মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের মানবিক আকাক্ষা জড়িত ছিল । তাঁর কবিতায়ও তা ওঠে এসেছে । কবিতার শব্দের লাবণ্য ও ইঙ্গিতময়তা কবিতাকে দিয়েছে যেন পবিত্র স্তোত্রপাঠের গভীর স্বনন এরই সত্যতা মেলে কাব্যগ্রন্থ যে হৃদয় শরণার্থী চিরকাল ’ বইটিতে ।